রবিবার, ০৫ মে ২০২৪, ০৬:১৭ পূর্বাহ্ন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন জোট ‘সন্ত্রাসবিরোধী ছাত্র ঐক্য’র আত্মপ্রকাশ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন জোট ‘সন্ত্রাসবিরোধী ছাত্র ঐক্য’র আত্মপ্রকাশ

নিজস্ব প্রতিবেদক: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্রিয়াশীল ১২টি ছাত্রসংগঠনের সমন্বয়ে ‘সন্ত্রাসবিরোধী ছাত্র ঐক্য’ নামে একটি নতুন জোট আত্মপ্রকাশ করেছে। ‘সন্ত্রাস-দখলদারমুক্ত নিরাপদ গণতান্ত্রিক ক্যাম্পাস’ প্রতিষ্ঠার জন্য ছাত্র আন্দোলন গড়ে তোলার লক্ষ্যে এই জোট গঠিত হয়েছে৷ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যানটিনে শুক্রবার বিকেলে সংবাদ সম্মেলন করে জোটের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেন ১২টি ছাত্রসংগঠনের প্রতিনিধিরা। আগামীকাল শনিবার বিকেল তিনটায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্য থেকে সন্ত্রাসবিরোধী গণপদযাত্রা করবে সন্ত্রাসবিরোধী ছাত্র ঐক্য৷
জোটে থাকা সংগঠনগুলো হলো- বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট, বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রী, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন, বিপ্লবী ছাত্র যুব আন্দোলন, বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ, নাগরিক ছাত্র ঐক্য, স্বতন্ত্র জোট ও ছাত্র গণমঞ্চ।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সমাজসেবা সম্পাদক ও ভিপি নুরুল হকের সংগঠন সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের নেতা আখতার হোসেন৷ নতুন জোটের পক্ষ থেকে চার দফা দাবি জানানো হয়৷
দাবিগুলো হলো- গত রোববার ডাকসু ভবনে ভিপি নুরুল হকসহ সব শিক্ষার্থীর ওপর হামলাকারীদের স্থায়ী বহিষ্কার ও আইনানুগ বিচার, ‘ব্যর্থতার’ দায়ে প্রক্টরের অপসারণ, ভিপি নুরুলসহ আহতদের বিরুদ্ধে হওয়া ‘মিথ্যা মামলা’ প্রত্যাহার ও আহতদের চিকিৎসার ব্যয়ভার প্রশাসনের বহন এবং ক্যাম্পাসে গণতান্ত্রিক পরিবেশ ও শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, হলে হলে দখলদারি ও গেস্টরুম-গণরুম নির্যাতন বন্ধ করা৷ লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ডাকসু ভবনে ঢুকে ভিপি নুরুল হকসহ শিক্ষার্থীদের ওপর নৃশংস হামলার ঘটনার দিন প্রক্টরকে দ্রুত ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে নৃশংসতা বন্ধ করতে উদ্যোগী হওয়ার অনুরোধ জানানো হলেও তিনি উপস্থিত হননি। উল্টো হামলাকারী মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ ও ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীদের সহযোগীর ভূমিকা পালন করেছেন তিনি। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তায় নিয়োজিত প্রক্টর দায়িত্ব পালনে চূড়ান্তভাবে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছেন। এমন নিষ্ঠুর ও অমানবিক ব্যক্তি কোনোভাবেই প্রক্টরের পদে বহাল থাকতে পারেন না। লিখিত বক্তব্যে অভিযোগ করা হয়, ‘ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীদের হাতে প্রতিদিন অসংখ্য শিক্ষার্থী শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন-নিপীড়নের শিকার হচ্ছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে হলে সন্ত্রাস ও দখলদারি জারি রেখে, শিক্ষার্থীদের ভয় দেখিয়ে ক্যাম্পাসগুলোকে তারা কনসেনট্রেশন ক্যাম্পে পরিণত করেছে। মতপ্রকাশ করা একজন শিক্ষার্থীর স্বাভাবিক অধিকার হলেও বুয়েটের আবরার ফাহাদকে স্বাধীন মতপ্রকাশের কারণে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীদের হাতে নিহত হতে হয়েছে৷’ সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে নতুন জোটের এক নেতা বলেন, ‘ঐতিহাসিক দখলদারির ইতিহাস’ থাকায় বিএনপির সহযোগী সংগঠন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলকে সন্ত্রাসবিরোধী ছাত্র ঐক্যে নেওয়া হয়নি, হবেও না৷ আর বর্তমানে একটি সন্ত্রাসী সংগঠন ছাত্রলীগের বিরুদ্ধেই মূলত এই জোট গঠিত হওয়ায় তাঁদের নেওয়ার বিষয়টি অসম্ভব।’ সংবাদ সম্মেলনে আরও বক্তব্য দেন জোটের সমন্বয়ক ও সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের (বাসদ) কেন্দ্রীয় সভাপতি আল কাদেরী, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের (মার্কসবাদী) কেন্দ্রীয় সভাপতি মাসুদ রানা ও বিপ্লবী ছাত্রমৈত্রীর কেন্দ্রীয় সভাপতি ইকবাল কবীর প্রমুখ। এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় সভাপতি মেহেদী হাসান, ছাত্র ফেডারেশনের (গণসংহতি আন্দোলন) কেন্দ্রীয় সভাপতি গোলাম মোস্তফা, ছাত্র ফেডারেশনের (বদরুদ্দীন উমর) কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল মাহমুদ, সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক বিন ইয়ামিন মোল্লা, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সুনয়ন চাকমা, বিপ্লবী ছাত্র-যুব আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সভাপতি আতিফ অনীক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শামসুন নাহার হল সংসদের ভিপি শেখ তাসনীম আফরোজ প্রমুখ৷

ভালো লাগলে নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2011 VisionBangla24.Com
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com